এক নজরে ফেনী

আয়তন, জনসংখ্যা ও অবস্থানঃ
বাংলাদেশ ।। ৮ টি বিভাগ ও ৬৪ টি জেলা নিয়ে গঠিত । এর মধ্যে ফেনীর অবস্থান ৬১তম । পূর্ব নাম শমসের নগর থেকে ফেনী নদীর নামানুসারে এই অঞ্চলের নামকরণ করা হয় ফেনী । ৯২৮.৩৪ বর্গ কিলোমিটার এর জেলার মোট জনসংখ্যা ১৪,৯৬,১৩৮ জন ২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী । এর মধ্যে পুরুষ ৭,২২,৬২৬ জন এবং মহিলা ৭,৭৩,৫১২ জন। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ১৪৫১ জন। রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ১৬১ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদর থেকে প্রায় ৯৭ কিলোমিটার দূরত্ব এই জেলার । ফেনীর উত্তরে কুমিল্লা জেলা ও ভারতের ত্রিপুরা প্রদেশ, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, দক্ষিণ-পূর্বে চট্টগ্রাম জেলা । পূর্বে ভারতের ত্রিপুরা প্রদেশ, পশ্চিমে নোয়াখালী জেলা অবস্থিত।

প্রতিষ্ঠাকালঃ
১৯৮৪ সালে প্রশাসনিক পুনর্গঠনের মাধ্যমে ফেনীর জন্ম । ১৯৮৪ সালের পূর্বে এটি নোয়াখালী জেলার একটি মহকুমা ছিল। এ মহকুমার গোড়াপত্তন হয় ১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দে মীরসরাই, ছাগলনাইয়া ও আমীরগাঁও এর সমন্বয়ে। প্রথম মহকুমা প্রশাসক ছিলেন কবি নবীনচন্দ্র সেন। ১৮৭২ থেকে ১৮৭৪ সালের মধ্যে মোগল আমলের আমীরগাঁও থানা নদী ভাঙ্গনের ফলে ফেনী নদীর ঘাটের কাছাকাছি খাইয়ারাতে স্থানান্তরিত হওয়ার কিছুদিন পর এটি ফেনী থানায় রূপান্তরিত হয়। ১৮৭৬ সালে নতুন মহকুমার পত্তন হলে খাইয়ারা থেকে থানা দপ্তরটি মহকুমা সদরে স্থানান্তরিত হয় ও নতুন মহকুমাটি ফেনী নামে পরিচিত হয় । পরবর্তীতে ১৮৮১ সালে তা ফেনী শহরে স্থানান্তরিত হয়।

নামকরণঃ
ফেনী নদীর নামানুসারে এ অঞ্চলের নাম রাখা হয়েছে ফেনী। মধ্যযুগে কবি-সাহিত্যিকদের লেখায় একটি বিশেষ নদীর স্রোতধারা ও ফেরী পারাপারের ঘাট হিসেবে ফনী শব্দের ব্যবহার পাওয়া যায় । ধারণা করা হয় আদি শব্দ ফনী মুসলমান কবি ও সাহিত্যিকদের ভাষায় ফেনীতে পরিণত হয়েছে । ফেনী নদীর তীরে রঘুনন্দন পাহাড়ের পাদদেশে অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে বীর বাঙ্গালী শমসের গাজীর রাজধানী ছিল। তিনি এখান থেকে যুদ্ধাভিযানে গিয়ে রৌশনাবাদ ও ত্রিপুরা রাজ্য জয় করেন। তিনি চম্পক নগরের একাংশের নামকরণ করেছিলেন জগন্নাথ সোনাপুর।

প্রশাসনিক এলাকাসমূহঃ
ফেনীর ৩টি সংসদীয় আসনে রয়েছে ৬টি উপজেলা, ৬টি থানা, ৫টি পৌরসভা, ৪৩টি ইউনিয়ন, ৫৪০টি মৌজা ও ৫৬৪টি গ্রাম
২০৫.০৭ বর্গকিলোমিটারের সর্ববৃহৎ সোনাগাজী উপজেলায় রয়েছে ১ টি পৌরসভা ০৯ টি ইউনিয়ন
১৯৭.৩৩ বর্গকিলোমিটারের ফেনী সদর উপজেলায় রয়েছে ১ টি পৌরসভা ১২ টি ইউনিয়ন
১৬৫.৮৪ বর্গকিলোমিটারের দাগনভূঁইয়া উপজেলায় রয়েছে ১ টি পৌরসভা ০৮ টি ইউনিয়ন
১৩৩.৪৯ বর্গকিলোমিটারের ছাগলনাইয়া উপজেলায় রয়েছে ১ টি পৌরসভা ০৫ টি ইউনিয়ন
৯৯.০৩ বর্গকিলোমিটারের ফুলগাজী উপজেলায় রয়েছে ১ টি পৌরসভা ০৬ টি ইউনিয়ন
৯৭.০৩ বর্গকিলোমিটারের সব থেকে ছোট পরশুরাম উপজেলায় রয়েছে ১ টি পৌরসভা ০৩ টি ইউনিয়ন

সংসদীয় আসনঃ
পরশুরাম, ফুলগাজী এবং ছাগলনাইয়া এই ০৩টি উপজেলার সমন্বয়ে ফেনী ০১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য শিরিন আকতার, ফেনী সদর ০২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী এবং সোনাগাজী ও দাগনভুইয়া উপজেলা নিয়ে ০৩ নম্বর আসনের সংসদ সদস্য মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী ।

মুক্তিযুদ্ধে ফেনীঃ
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ফেনী ছিল দুই নম্বর সেক্টরের অধীনে । পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সাথে তিন দিক থেকে ফেনীর রয়েছে সীমান্ত। ফলে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ফেনীতে ব্যাপক অত্যাচার নিপীড়ন চালায়। ফেনী সীমান্তে মুক্তিযুদ্ধের বেশ কয়েকটি যুদ্ধ হয়। এর মধ্যে শুভপুর ও বিলোনিয়া যুদ্ধ অন্যতম। তৎকালীন আওয়ামী লীগের নেতা ফেনী মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আব্দুল মালেক (যুদ্ধকালীন সময়ে বি এল এফ এর প্রেসিডেন্ট) ও খাজা আহমদের নেতৃত্বে ফেনীর মুক্তিযোদ্ধারা দেরাদুন ও চোত্তাখোলায় প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। মুক্তিযুদ্ধকালীন সাব-সেক্টর কমান্ডার জাফর ইমামের নেতৃত্বে বিলোনিয়া যুদ্ধ একটি অনন্য রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছে । ৬ ডিসেম্বর ফেনী জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে ফেনীকে মুক্ত করেন। প্রতি বছর ৬ ডিসেম্বর দিনটিকে ফেনী জেলাবাসী ফেনী মুক্ত দিবস হিসেবে পালন করে। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য বীরত্বের জন্য ফেনীর ৩১ জন মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় খেতাব দেওয়া হয়। খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ৪ জন বীর উত্তম, ৭ জন বীর বিক্রম এবং ২০ জন বীর প্রতীক খেতাবে ভুষিত হন ।

শিক্ষা সংক্রান্ত তথ্যঃ
শিক্ষা ব্যবস্থায় ফেনী জেলার অগ্রগতি উলেখযোগ্য । ফেনী আদর্শ পাইলট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাধ্যমে, ফেনীতে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু হয় ১৮৮৪ সালে । এর দুই বছরের মাথায় ১৮৮৬ সালে ততকালীন ফেনী মহকুমা প্রশাসক কবি নবীনচন্দ্র সেন প্রতিষ্ঠা করেন ফেনী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় । নারী শিক্ষার জন্য ১৯১০ সালে ফেনীতে প্রতিষ্ঠিত হয় সরলাদেবী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় যা বর্তমানে ফেনী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় নামে প্রতিষ্ঠিত। মাদ্রাসা শিক্ষায় ১৯২৩ সালে ফেনীতে প্রতিষ্ঠিত হয় ফেনী আলিয়া মাদ্রাসা। বর্তমানে ফেনীতে – সাক্ষরতা–র হারঃ ৫৯.৬% । ফেনীতে ডিগ্রী কলেজ আছে ১১ টি, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ ১০ টি, গার্লস ক্যাডেট কলেজ ১ টি, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ১টি, কম্পিউটার ইনস্টিটিউট ১টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৫৫ টি, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৯ টি, মাদ্রাসা ৯৭ টি, টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ১ টি, পি টি আই ১ টি এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৫২৮ টি।

স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্যঃ
স্বাস্থ্য সেবায় সরকারি খাতের পাশাপাশি বেসরকারি খাত, বিভিন্ন এনজিও ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান কাজ করছে ফেনীতে । স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে চারটি অধিদপ্তর যথাক্রমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, নার্সিং সেবা পরিদপ্তর ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর নাগরিকদের স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছে ফেনীতে । স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ফেনীতে রয়েছে ০১ টি ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতাল । ০২টি ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্স । ০৩টি ৩১ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্স এবং একটি করে হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল, ডায়াবেটিস হাসপাতাল, বক্ষ ব্যাধি ক্লিনিক, ট্রমা সেন্টার, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, সেবা (নার্সিং ট্রেনিং ইনস্টিটিউট) রয়েছে । ইউনিয়ন পর্যায়ে রয়েছে ১৯ টি উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ৩৩ টি ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ।। জনসেবার মান ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে ফেনীতে প্রস্তাবিত আছে ১৫৩ টি কমিউনিটি ক্লিনিক । বিভিন্ন হাসপাতাল, কমিউনিটি ক্লিনিক, ও মেডিকেল কলেজের জন্যে নির্বাচিত ১৪৮ টি স্থান । সপূর্ণ নির্মিতঃ ১১৪ টি বর্তমানে চালুকৃত রয়েছে ১১৪ টি স্বাস্থ সেবা কেন্দ্র ।

ফেনীর অর্থনীতিঃ
ফেনী জেলার অর্থনীতি প্রধানত কৃষি নির্ভর। জেলার মধ্য দিয়ে কয়েকটি নদী প্রবাহিত হওয়ার ফলে এর কৃষি জমি সমূহ বেশ উর্বর। এছাড়া এ অঞ্চলের বেশির ভাগ অধিবাসী বিদেশ থাকার ফলে প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক আয় এ জেলার অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে। বর্তমানে অনেক কলকারখানা এখানকার অর্থনৈতিক ও যোগাযোগ ব্যাবস্থাকে সমৃদ্ধ ও সমুন্নত করছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রকাশিত আর্থিক অন্তর্ভূক্ত সূচীতে ফেনী দ্বিতীয়।
ফেনীতে তৈরি হচ্ছে বৃহৎ ইকোনমিক জোন ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর’ এছাড়াও রয়েছে ০২টি শিল্প নগরী, ০৫ টি ভারী শিল্পে, দুলা মিয়া কটন মিল্স, দোস্ত টেক্সটাইল মিলস, স্টারলাইন ফুড, কোয়ালিটি জুট ইয়ার্ন মিলস লিঃ, আবুল খায়ের ম্যাচ ফ্যাক্টরী লিঃ, আছে চামড়া শিল্প, ০৭ টি মাঝারী শিল্প, ৮২৬টি ক্ষুদ্র শিল্প এবং ৩৪১৯ টি কুটির শিল্প এছাড়াও ফেনীতে রয়েছে বিশাল আকারের রাবার বাগান ।

ফেনীতে সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে ইপিজেড, বায়ু বিদ্যুৎ, বিদ্যুৎ উৎপাদন প্লান্ট, প্রাকৃতিক গ্যাস, শিল্প সম্ভাবনা এমনকি রয়েছে সমুদ্র বন্দরও।

যোগাযোগ ব্যবস্থাঃ
দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চলমান গতির মূল উৎসই চট্টগ্রাম বন্দর, রাজধানী সহ সারা দেশের সাথে অর্থনৈতিক করিডোর বা অর্থনৈতিক লাইফ লাইন হলো ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক । আর্ত সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চলমান গতির সাথে তাল মিলিয়ে অতি সম্প্রতি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে চার লেনে উন্নিত করা হয়েছে, ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর অংশে রয়েছে ৩১ কিঃ মিঃ দীর্ঘ মহাসড়ক । ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কের উপর ফেনীর মহিপাল একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল । ঢাকা-চট্টগ্রাম ছাড়াও সড়কের এই অংশে মিলিত হয়েছে লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী ও ফেনী জেলা সদর হতে আগত জাতীয় মহাসড়ক । ফলে ফেনীর মহিপাল অংশটি পরিণত হয়েছে একটি ব্যস্ততম সংযোগস্থলে । সম্প্রতি মহিপালের মহাসড়ক সংযোগস্থলে যানবাহনের যানজট নিরসনে নির্মাণ করা করা হয় দেশের প্রথম ও একমাত্র ছয় লেন বিশিষ্ট ফ্লাইওভার । এছাড়া ফেনী জেলার মধ্য দিয়ে গেছে জাতীয় রেল যোগাযোগ ।

ঐতিহাসিক স্থানঃ
ফেনী জেলার রয়েছে শত বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য । মুসলিম শাসন আমল, মোগল আমল, ঔপনিবেশিক আমল থেকে শুরু করে স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস বহন করছে এই জেলা-

হযরত শাহ সৈয়দ আমির উদ্দীন রঃ (পাগলা বাবার) মাজার । তিনি তাঁর আসল নামের আড়ালে পাগলা মিয়া নামেই সমধিক পরিচিত ছিলেন। তিনি একাধারে ছিলেন পাগল, আধ্যাত্বিক সাধক এবং সকল ধর্মের সকল জাতের ঊর্ধ্বে এক মহামানবতার প্রতীক। ফেনী জেলার প্রাণ কেন্দ্র ট্রাঙ্ক রোডের পাশেই তাকিয়া বাড়িতে রয়েছে প্রখ্যাত ‘পাগলা মিয়ার’ মাজার। ফেনী অঞ্চল ও এর আশে পাশের সকল ধর্মের মানুষের কাছে এটি এক পরম তীর্থ কেন্দ্র।

চাঁদগাজী ভুঞাঁ মসজিদ, ছাগলনাইয়া । ফেনী জেলায় বার ভূঁইয়াদের স্মৃতিবিজড়িত মুসলিম স্থাপত্য নির্দশন চাঁদগাজী ভূঁইয়া জামে মসজিদ। বাংলার বার ভূঁইয়াদের অন্যতম চাঁদগাজী ভূঁইয়া ছাগলনাইয়ার চাঁদগাজী এলাকায় ১১২২ হিজরিতে নির্মাণ করেছিলেন এ মসজিদটি । ২৮ শতক জমির ওপর নির্মিত দৃষ্টিনন্দন চাঁদগাজী ভূঁইয়া মসজিদটি ।
প্রাচীর সুড়ঙ্গ মঠ, ফুলগাজী । ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার ফুলগাজী সরকারি কলেজের পাশেই রয়েছে শতবছরের প্রাচীন এই দোল মন্দির । ১২০০ বঙ্গাব্দের শেষ এবং ১৩০০ বঙ্গাব্দের শুরুতে ফুলগাজী-ত্রিপুরা সহ অত্র অঞ্চলে ছিল রাজা আহাম্মদ আলির রাজত্ব। তাই তার নামে নামকরণ করে বাংলা ১৩০৫ সনের চৈত্র মাসে পূর্ন চন্দ্র চৌধুরী এই মন্দিরটি তৈরি করেন। পরে এটি সবার কাছে দোল মন্দির হিসেবে পরিচিতি পায় । মন্দিরের পাশে হতো দোল উৎসব । বৈশাখ মাস জুড়ে এখানে মেলা, উৎসব, নাচ গান সব হতো।

বিলোনিয়া সীমান্ত পোস্ট ও বিলোনিয়া রেল স্টেশন । ফেনীর ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে ফেনী-বিলোনীয়া সীমান্তের যুদ্ধ ছিল মুক্তিবাহিনী ও পাক হানাদার বাহিনীর জন্য সামরিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং উভয়ের জন্য ছিল একটি মর্যাদার লড়াই। ফেনীর বুক চিরে চলে গেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ, যা ঢাকা পর্যন্ত প্রসারিত। মার্চ ’৭১-এ চট্টগ্রাম বন্দর থেকে বাড়তি অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সৈন্য (তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান থেকে প্রেরিত) ফেনীর ওপর দিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল পাকিস্তানিদের ।

শমসের গাজীর স্মৃতি বিজড়িত স্থান সমূহ । বঙ্গবীর শমসের গাজী, সমশের গাজী ছিলেন একজন ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী এবং ত্রিপুরার রোশনাবাদ পরগনার কৃষক বিদ্রোহের নায়ক। ১৭৫৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তির আগ্রাসন প্রতিহত করতে গিয়ে মৃত্যু বরণ করেন। তিনি ভাটির বাঘ বলে পরিচিত । নবাব সিরাজুদ্দৌলার পর তিনিই ঔপনিবেশিক শক্তির হাতে প্রথম নিহত হন । ছাগলনাইয়ার চম্পকনগরে ভারতের সীমান্ত এলাকাটি শমসের গাজীর স্মৃতি বিজড়িত স্থান । এখানে রয়েছে শমসের গাজীর সুড়ঙ্গ, শমসের গাজীর দীঘি এবং আরও অনেক কিছু । তবে তার প্রাসাদসহ অন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ ভারতের ত্রিপুরার মধ্যে ভাগ হয়ে রয়ে গেছে ।

দর্শনীয় স্থান
ফেণীতে রয়েছে প্রচুর সংখ্যক চোখ জুড়ানো দর্শনিয় স্থান । সর্বপ্রথম বলতে হয়-

মুহুরী সেচ প্রকল্প এলাকাঃ ফেনী র সোনাগাজী উপজেলায় অবস্থিত মুহুরী প্রকল্প বা মুহুরী প্রজেক্ট হলো বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সেচ প্রকল্প । এছাড়াও দেশের প্রথম বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি এখানে অবস্থিত। দেশের সবচেয়ে বড় মৎস্য জোন হিসেবেও মুহুরী প্রকল্প পরিচিতি পেয়েছে । ফলে এটি বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থান ও পর্যটন কেন্দ্ৰ হিসেবে গড়ে উঠেছে ।

ফেনী সদর বিজয় সিংহ দীঘিঃ বাংলার বিখ্যাত সেন বংশের প্রতিষ্ঠাতা বিজয় সেনের অমর কীর্তি এ বিজয় সিংহ দীঘি । এ দীঘি ফেনী শহরের প্রায় ২ কিঃমিঃ পশ্চিমে বিজয় সিংহ গ্রামে ফেনী সার্কিট হাউজের সামনে অবস্থিত। এ দীঘির আয়তন ৩৭.৫৭ একর। অত্যন্ত মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে অবস্থিত এ দিঘীর চৌপাড় খুব উঁচু ও বৃক্ষ শোভিত । ফেনীর ঐতিহ্যবাহী দিঘীর মধ্যে বিজয় সিংহ দীঘি অন্যতম । এ দিঘী দেখার জন্য জেলার এবং দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিনিয়ত দর্শনার্থীরা আসে ।

ভাষা শহীদ সালাম গ্রন্থাগারঃ ভাষা শহীদ আব্দুস সালামের জন্ম ১৯২৫ সালে দাগনভূঁঞা উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়নের লক্ষণপুর গ্রামে যা বর্তমানে তাঁরই নামানুসারে সালাম নগর করা হয়েছে । যিনি ১৯৫২ সালে বাংলা ভাষার স্বীকৃতি আদায়ের সংগ্রামে নিহত হন । তার আত্মদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ও ত্যাগের স্মৃতিচারণ করতে, ফেনীতে তাঁর নিজ গ্রামে নির্মাণ করা হয় ভাষা শহীদ আবদুস সালাম গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর ।

কাজিরবাগ ইকো পার্কঃ সামাজিক বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে ফেনী সদর উপজেলার কাজিরবাগে গড়ে উঠেছে সৌন্দর্যমণ্ডিত ও দৃষ্টিনন্দন এই ইকো পার্কটি । ৪.৭৫ একর জমির ওপর নির্মিত পার্কটি ফেনীসহ আশেপাশের এলাকার সাধারণ মানুষ ও শিশু কিশোরদের জন্য পারিবারিক বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

কৈয়ারা দীঘিঃ ভাটির বাঘ শমসের গাজীর মাতা কৈয়ারা বিবি । বীরমাতা হিসাবে সমগ্র অঞ্চলে প্রশংসিত । জনসাধারণের পানীয় জলের সুবিধার্থে শমসের গাজী মাতা কৈয়ারা বিবির নামে এই দিঘিটি খনন করেন । কৈয়ারা গ্রাম ও তাঁর স্মৃতিই বহন করছে । এ বিশাল দীঘি নির্মল ও সুস্বাদু পানির জন্য বিখ্যাত ।

জগন্নাথ কালী মন্দিরঃ ছাগলনাইয়া উপজেলায় অবস্থিত এই মন্দির । শমসের গাজী তার বাল্যকালে লালন কর্তা জগন্নাথ সেনের স্মৃতিতে এ মন্দির ও কালী মূর্তি নির্মাণ করেন ।
প্রতাপপুর জমিদার বাড়িঃ দাগনভূঁইয়া উপজেলার এক ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি। প্রায় ১৮৫০ কিংবা ১৮৬০ সালে এই জমিদার বাড়িটি নির্মিত হয়। এই জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন রাজকৃষ্ণ সাহা কিংবা রামনাথ কৃষ্ণ সাহা। স্থানীয়দের কাছে এটি প্রতাপপুর বড় বাড়ি হিসেবেও পরিচিত। এই এলাকার আশেপাশে যত জমিদার ছিল সবার শীর্ষে ছিল এই জমিদার। এই জমিদার বংশধররা জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পরও ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত এই জমিদার বাড়িটিতে ছিল। এছাড়া এই অঞ্চলে আরো বেশ কয়েকজন জমিদার ছিলেন । তাদের কিছু নিদর্শন এখনো টিকে আছে ।

মোহাম্মদ আলী চৌধুরী মসজিদঃ ফেনী জেলার সদরে অবস্থিত একটি প্রাচীন মসজিদ ও একটি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি। মুঘল আমলে এই মসজিদটি ফেনী অঞ্চলের শর্শদীতে তৈরি করেন স্থানীয় একজন মুঘল কর্মকর্তা। মুঘল নায়েব, মোহাম্মদ আলী চৌধুরী ১৭৬২ সালে ফেনী অঞ্চলে নিয়োগপ্রপ্ত হন। তার সময়কালে তিনি এ এলাকায় অনেক স্থাপনা তৈরি করেন যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ফেনীর এ মসজিদটি।

রাজাঝির দীঘিঃ ফেনীর একটি ঐতিয্যবাহী দীঘি । ১৮৭৫ সালে ফেনী মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হলে তার সদর দপ্তর গড়ে তোলা হয় এই রাজাঝির দীঘির পাড়ে । জনশ্রুতি আছে ত্রিপুরা মহারাজের প্রভাবশালী একজন রাজা তার কন্যার অন্ধত্ব দুর করার মানসে প্রায় ৫/৭ শত বছর পূর্বে এ দীঘি খনন করা হয় বলে স্থানীয় ভাষায় কন্যা-কে ঝি বলা হয় তাই দীঘিটির নামকরণ করা হয় রাজাঝি’র দিঘি ।

শিলুয়া মন্দির ও শিল পাথরঃ ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার একটি প্রাচীন মন্দির । শিলুয়া মন্দির ছাগলনাইয়া উপজেলায় পাঠাননগর ইউনিয়নের মধ্য শিলুয়া গ্রামে অবস্থিত । প্রাচীন শিলামূর্তির ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারের কারণে এই স্থানটি সে সময় থেকেই শিলুয়া বা শিল্লা নামে পরিচিত লাভ করে । প্রাচীন কালে এই স্থানে বৌদ্ধ ধর্ম ও কৃষ্টির বিকাশ ঘটেছিল বলে ধারণা করা হয় ।

সাত মঠ বা সাত মন্দিরঃ ছাগলনাইয়া উপজেলার একটি প্রাচীন মঠ । এটি বাংলাদেশ প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তর এর তালিকাভুক্ত একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা । ছাগলনাইয়ার হিন্দু জমিদার বিনোদ বিহারির বাড়িটি আট একর জায়গাজুড়ে নির্মিত। বর্তমান উপজেলা শহরের বাঁশপাড়ায় এর অবস্থান। বাড়ির পাশে রয়েছে সাতটি চিতা মন্দির। এক সঙ্গে সাতটি মঠ ফেনীর ছাগলনাইয়া ব্যাতিত বাংলাদেশের অন্য কোথাও আর দেখা যায় না । প্রতিটি মন্দিরের গায়ে অপূর্ব দৃষ্টিনন্দন কারুকাজ করা আছে। প্রতিটি মন্দিরের চূড়া একটি অন্যটির থেকে ভিন্ন!

কালীদহ বরদা বাবু জমিদার বাড়িঃ স্থানীয়দের ভাষ্যমতে এটি নির্মান করা হয় ১৮৬০ এর দশকে। প্রায় ১৫০ বছর পুরানো এই বাড়িটি নির্মান করেন জমিদার বাবু বরদা প্রশন্ন দাস । ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় এটি রাজাকারদের টর্চার সেল হিসেবেও ব্যবহৃত হয়েছে । এখানে সাধারন মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এনে পাশবিক নির্যাতন চালাতো রাজাকাররা।
বাঁশপাড়া জমিদার বাড়িঃ ছাগলনাইয়া উপজেলার বাঁশপাড়া গ্রামে অবস্থিত এক ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি । জমিদার বিনোদ বিহারি এই বাঁশপাড়া জমিদার বাড়িটি প্রতিষ্ঠিত করেন । এছাড়াও তিনি এখানে সাতটি মন্দির বা মঠ নির্মাণ করেন । যার জন্য অনেকে উক্ত বাড়িটিকে সাত মন্দির বা মঠের বাড়ি বলে থাকে। অনেকে আবার বিনোদ বিহারির বাড়ি বলেও ডেকে থাকে। বিনোদ বিহারি ভারতবর্ষ ভাগ হলে তিনি উক্ত জমিদারীর সকল সম্পত্তি ছেড়ে ভারতের কলকাতায় চলে যান। এরপর থেকেই উক্ত বাড়িটি পরিত্যাক্ত হয়ে পড়ে।

শমসের গাজীর কেল্লাঃ এটি ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া থানার চম্পকনগর ও জগন্নাথ সোনাপুর এ অবস্থিত। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে এই জায়গাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলো। শমসের গাজী ছিলেন একজন ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী এবং ত্রিপুরার রোশনাবাদ পরগনার কৃষক বিদ্রোহের নায়ক । ১৭৫৭ সালে ব্রিটিশ ঐপনিবেশিক শক্তির আগ্রাসন প্রতিহত করতে গিয়ে মৃত্যু বরণ করেন তিনি, ভাটির বাঘ বলে পরিচিত। শমসের গাজী নবাব সিরাজুদ্দৌলার পর তিনিই ঔপনিবেশিক শক্তির হাতে প্রথম নিহত হন । বর্তমানে তার স্মৃতিকে ধরে রাখতে শমসের গাজীর বাঁশের কেল্লা এই রিসোর্টস পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে তৈরি করা হয়েছে । অনেক পর্যটকই সেখানে ভ্রমন করেন।
ফেনী জেলা শিক্ষা, সংস্কৃতি, খেলাধুলার দিক থেকেও বেশ এগিয়ে গেছে- সংস্কৃতির বিকাশ কেন্দ্র হিসেবে আছে জেলা শিল্পকলা একাডেমি । জনসাধারণ থেকে শুরু করে সর্বস্তরের জ্ঞ্যান চর্চার জন্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে জেলা সরকারী গনগ্রন্থাগার । খেলাধুলার জন্যে আছে একটা স্টেডিয়াম । এবং রয়েছে সিমান্ত রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের একটি দপ্তর ।

নদ-নদী
নদীমাতৃক এই দেশের বেশ কয়েকটি নদী বয়ে গেছে ফেনী জেলার বুক চিরে । যেমন-
• ফেনী নদী
• মুহুরী নদী
• ছোট ফেনী নদী
• কহুয়া নদী
• সিলোনিয়া নদী
• কালিদাস পাহালিয়া নদী।

বিখ্যাত ব্যক্তিত্বঃ
যুগে যুগে ফেনীর মাটিকে আলোকিত করেছেন অনেক বিখ্যাত ব্যাক্তি, ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে দেশের শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে ফেনী জেলায় উলেখযোগ্য অবদান রয়েছে অনেকের । ফেনী জেলার বরেণ্য ব্যক্তিদের মধ্যে উলেখযোগ্য –

• কবি নবীন চন্দ্র সেন — বাংলা সাহিত্যের একজন উল্লেখযোগ্য কবি । ও ফেনীর প্রথম মহকুমা প্রশাসক ।
• বঙ্গবীর শমসের গাজী –– ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী এবং ত্রিপুরার রোশনাবাদ পরগনার কৃষক বিদ্রোহের নায়ক ।
• আবদুস সালাম –– ৫২’র ভাষা শহীদ।
• জহির রায়হান –– শহীদ বুদ্ধিজীবী ও প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক
• শহীদুল্লা কায়সার –– শহীদ বুদ্বিজীবি ও সাহিত্যিক
• কাজী এবাদুল হক –– ভাষা সৈনিক এবং প্রাক্তন বিচারপতি।
• জাফর ইমাম –– মুক্তিযোদ্ধা, সাব-সেক্টর কমান্ডার ও এবং সাবেক মন্ত্রী।
• বেগম খালেদা জিয়া –– রাজনীতিবিদ, বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী
• সেলিনা পারভীন –– শহীদ বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিক
• স্যার এ,এফ রহমান — ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বাঙালি উপাচার্য, ইতিহাসবিদ এবং সমাজ সংস্কারক
• আওরঙ্গজেব চৌধুরী –– বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রধান।
• আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী –– ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর প্রাক্তন উপাচার্য ।
• আবদুল আউয়াল মিন্টু –– এফবিসিসিআই এর সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস চেয়ারম্যান বিএনপি।
• আবদুস সালাম –– বাংলাদেশ প্রেস ইন্সটিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রথম মহাপরিচালক।
• আবুল কালাম আজাদ চৌধুরী –– বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)’র প্রাক্তন চেয়ারম্যান এবং প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা।
• আমিন আহমদ –– প্রাক্তন বিচারপতি।
• আমীন আহম্মেদ চৌধুরী –– বীর বিক্রম খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা।
• গাজীউল হক –– সাহিত্যিক, গীতিকার এবং ভাষাসৈনিক
• ফয়জুল মহিউদ্দিন –– শহীদ বুদ্ধিজীবী।
• রবিউল হক –– বীর বিক্রম খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা।
• শরিফা খাতুন –– শিক্ষাবিদ এবং ভাষা সৈনিক।
• শহীদ ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন মমতাজ –– বীর মুক্তিযোদ্ধা
• সিরাজুল হক খান –– শহীদ বুদ্ধিজীবী।
• সুলতান মাহমুদ –– বীর উত্তম খেতাব প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা।
• এ বি এম মূসা –– প্রখ্যাত সাংবাদিক, সম্পাদক এবং কলামিস্ট
• গিয়াস কামাল চৌধুরী –– সাংবাদিক, কলামিস্ট এবং সংবাদ বিশ্লেষক।
• ইকবাল সোবহান চৌধুরী –– সাংবাদিক নেতা এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা।
• জহুর হোসেন চৌধুরী –– সাংবাদিক।
• বেলাল চৌধুরী –– সাংবাদিক এবং প্রাবন্ধিক।
• শাহরিয়ার কবির –– লেখক এবং সাংবাদিক।
• হবীবুল্লাহ বাহার চৌধুরী –– রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক এবং ফুটবলার।
• সেলিম আল দীন –– প্রখ্যাত নাট্যকার এবং গবেষক।
• ডঃ ইনামুল হক –– অভিনেতা, লেখক এবং নাট্যকার।
• লাকি ইনাম- অভিনেত্রী ও মঞ্চ ব্যাক্তিত্ব
• রোকেয়া রফিক বেবী- প্রখ্যাত মঞ্চাভিনেত্রী
• রোকেয়া প্রাচী –– অভিনেত্রী এবং নাট্যকার।
• শমী কায়সার –– অভিনেত্রী এবং প্রযোজক।
• কাইয়ুম চৌধুরী –– চিত্রশিল্পী।
• গিয়াস উদ্দিন সেলিম –– নাট্যকার এবং নির্মাতা
• ওয়াসফিয়া নাজরীন –– পর্বতারোহী, এভারেস্ট বিজয়ী দ্বিতীয় বাঙালি নারী।
• খান বাহাদুর আবদুল আজিজ –– শিক্ষাবিদ, লেখক এবং সমাজকর্মী।
• জয়নাল হাজারী –– বাংলাদেশী প্রাক্তন সংসদ সদস্য এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
• জাহান আরা বেগম সুরমা –– রাজনীতিবিদ।
• নজির আহমেদ –– ছাত্রনেতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার তিনি প্রথম শিকার।
• পান্না কায়সার –– রাজনীতিবিদ।
• মকবুল আহমদ –– বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির।
• মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন –– ক্রিকেটার।
• শামসুন নাহার মাহমুদ –– নারী মুক্তি আন্দোলনের নেত্রী।
• সুমাইয়া কাজী –– নারী উদ্যোক্তা।

ফেনী সদর-
• জেলা পরিষদ ভবন
• ডাক বাংলো
• সার্কিট হাউজ
• শহীদ মিনার
• ফেনী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়
• ফেনী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
• ফেনী আলিয়া মাদ্রাসা
• ফেনী সরকারী কলেজ
• রাজাজির দিঘী,
• বিজয় সিং দিঘী
• ষ্টেডিয়াম
• গার্লস ক্যাডেট কলেজ
• শিল্পকলা একাডেমি
• শের শাহের আমলে নির্মিত গ্র্যান্ড ট্রাংক রোড
• ফেনী বিমানবন্দর

ছাগলনাইয়া-
• শিলুয়ার শিল
• শুভপুর ব্রিজ
• বাশপাড়া জমিদার বাড়ী
• সাত মন্দির
• চাদগাজী ভূইয়া মসজিদ
• শমসের গাজীর কেল্লা
• শমশের গাজীর দীঘি ও সুড়ঙ্গ
• কৈয়ারা দিঘী

সোনাগাজী-
• সেনেরখিল জমিদার বাড়ি
• শাহাপুর মুসলিম জামে মসজিদ
• মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি সৌধ,
• মুহুরী সেচ প্রকল্প,
• সফরপুর সুফি সাহেবের বাড়ী জামে মসজিদ,
• সুজাপুর ওয়ালি ভূঁঞা বাড়ী জামে মসজিদ,
• বাদশা মিয়া চৌধুরী বাড়ী জামে মসজিদ,
• কুঠির কালী বাড়ী মন্দির,
• আঞ্চলিক ধান গবেষণা কেন্দ্র,
• আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামার,
• বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র

দাগনভুইয়া-
• ছোট ফেনী নদী
• দাগনভূঁইয়া জমিদার বাড়ি
• দাগনভূঁইয়া দীঘি
• প্রতাপপুর জমিদার বাড়ি
• চৌধুরী বাড়ি মসজিদ
• বিজিবি ক্যাম্প
• ভাষা শহীদ আবদুস সালাম গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর
• সিলোনীয়া নদী
• দুলামিয়া কটন স্পিনিং মিলস লিমিটেড

ফুলগাজী-
• প্রাচীনতম মন্দির
• গান্ধী আশ্রম
• ফুলগাজী যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
• সরকারী গ্রামীণ মৎস্য খামার, ফুলগাজী

পরশুরাম-
• শমসের গাজীর দিঘী – সাতকুচিয়া, বক্সমাহমুদ ইউনিয়ন
• জংলী শাহ-এর মাজার – উত্তর গুথুমা, পরশুরাম পৌরসভা
• আবদুল্লাহ শাহ-এর মাজার – উত্তর গুথুমা, পরশুরাম পৌরসভা
• বিলোনিয়া স্থল বন্দর – বাউরখুমা, পরশুরাম পৌরসভা
• মালিপাথর বধ্য ভূমি, পরশুরাম, ফেনী
• বিলোনিয়া রেলওয়ে জংসন-বিলোনিয়া,পরশুরাম, ফেনী
• মহেশপুস্করনী রাবার বাগান